সূরা আল মাউন এর নামকরণ ও তাফসীর এবং শিক্ষণীয় বিষয় জেনে নিন
নামকরণ : অত্র সূরার সর্বশেষ আয়াতে উল্লিখিত الْمَاعُوْنَ মাউন শব্দ থেকেই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এ সূরাকে সূরা আদ-দীন ও সূরা ইয়াতীম নামেও আখ্যায়িত করা হয়। (ফাতহুল কাদীর) সূরায় কাফিরদের দুটি বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত মুসল্লিদের তিনটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। أَرَأَيْتَ ক্রিয়া দ্বারা নাবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করা হয়েছে। মূলত প্রশ্নবোধক বাক্য দ্বারা বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। أَرَأَيْتَ অর্থ ألم تعلم তুমি কি জানো? মূলত এর দ্বারা শ্রোতাকে বক্তব্যের প্রতি উৎসাহ প্রদান ও আকৃষ্ট করা হচ্ছে। يُكَذِّبُ অর্থ মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। الدِّيْنِ দ্বারা আখিরাতকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ যারা পুনরুত্থান, হিসাব, প্রতিদান ইত্যাদিসহ আখিরাতের ব্যাপারে নাবী রাসূলগণ যে সংবাদ দিয়েছেন তা অস্বীকার করে। (يَدُعُّ الْيَتِيْمَ) يَدُعُّ ক্রিয়ার অর্থ হলো: دع বা রূঢ় আচরণ করে হাঁকিয়ে দেয়া। দুনিয়াতে অবিশ্বাসীরা ইয়াতীমদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করত : রূঢ় আচরণের সাথে হাঁকিয়ে দিত এবং তাদের প্রতি জুলুম করত, খাদ্য দেওয়া তো দূরের কথা তাদের সাথে ভাল ব্যবহারও করত না। আরেকটি অর্থ হল গলাধাক্কা দেয়া। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (يَوْمَ يُدَعُّوْنَ إِلٰي نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا) “সেদিন তাদেরকে চরমভাবে ধাক্কা মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের অগ্নির দিকে”। (সূরা তুর ৫২: ১৩) لَا يَحُضُّ عَلٰي طَعَامِ.....)) ‘মিস্কীনদের খাবার দিতে কখনও সে (অন্যদের) উৎসাহ দেয় না’ যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন: (كَلَّا بَلْ لَّا تُكْرِمُوْنَ الْيَتِيْمَ وَلَا تَحَآضُّوْنَ عَلٰي طَعَامِ الْمِسْكِيْنِ ) “কক্ষনও নয়, বরং তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান কর না। এবং মিসকীনকে অন্নদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।” (সূরা ফাজর ৮৯: ১৭-১৮) সুতরাং ইয়াতীমদের দেখাশুনা করা এবং তাদের প্রয়োজনা পূরণ করা ঈমানের দাবী। অতঃপর যে-সব মুসল্লিরা সালাতের ব্যাপারে উদাসীন তাদের কঠিন ধমক ও জাহান্নামের হুমকি দেয়া হয়েছে। (عَنْ صَلٰوتِهِمْ سَاهُوْنَ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন : এরা হচ্ছে মুনাফিক অর্থাৎ যারা সকলের সাথে থাকলে সালাত আদায় করে কিন্তু একাকী বা গোপনে থাকলে সালাতের ধার ধারে না। এজন্য আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন : لِّلْمُصَلِّيْنَ অর্থাৎ যারা সালাত আদায়কারী এবং সালাতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল কিন্তু পরবর্তীতে সালাতের ব্যাপারে অলসতা প্রর্দশন করতঃ হয় সালাত সম্পূর্ণ বর্জন করে অথবা শরীয়ত নির্ধারিত সময়ে আদায় না করে অথবা সালাত রাসূলের শেখানো পদ্ধতিতে আদায় না করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (فَخَلَفَ مِنْ ۭبَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلٰوةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا) “তাদের পরে এলো অপদার্থ পরবর্তীগণ, তারা সালাত নষ্ট করল ও কুপবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং তারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।” (সূরা মারইয়াম ১৯: ৫৯) তাই প্রসিদ্ধ তাবেয়ী মাসরূক, আবূ যুহা ও আতা বিন দীনার (রহঃ) বলেছেন : আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা তিনি (عَنْ صَلٰوتِهِمْ سَاهُوْنَ) এ কথা বলেছেন, فِيْ صَلٰوتِهِمْ سَاهُوْنَ বলেননি। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার এ কথার অর্থ হলো : তারা সালাতের ব্যাপারে উদাসীন। সালাতের মাঝে উদাসীন এ কথা বলেননি। কেননা যারা সালাতের ব্যাপারে উদাসীন তারা হয়তো নিয়মিত বা অনিয়মিতভাবেই সালাতের উত্তম সময় থেকে বিলম্ব করে মাকরূহ সময়ে আদায় করে, আবার হয়তো বিনয় নম্রতাসহ সালাতের রুকন-আরকান ও শর্তসমূহ ভালভাবে আদায় করে না। তাই নাবী (সাঃ) বলেন : ওটা মুনাফিকের সালাত (তিনবার বলেছেন)। সে সূর্য অস্তমিত যাওয়ার প্রতিক্ষায় বসে থাকে, সূর্য অস্ত যেতে শুরু করে এমনকি তা শয়তানের দুশিং এর মাঝামাঝি চলে যায় তখন সে দাঁড়িয়ে চারটি ঠোকর মারে। অল্প সময় ছাড়া তারা আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণই করে না। (সহীহ মুসলিম হা. ১৪৪৩) يُرَآؤُوْنَ অর্থাৎ এ শ্রেণির লোকেরা মানুষকে দেখানোর জন্য সালাত আদায় করে; আল্লাহ তা‘আলার সন্তষ্টির জন্য করে না। তাই সবার সাথে থাকলে চক্ষু লজ্জায় সালাত আদায় করে, আর গোপনে চলে গেলে সালাতের প্রয়োজন বোধ করে না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (اِنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ یُخٰدِعُوْنَ اللہَ وَھُوَ خَادِعُھُمْﺆ وَاِذَا قَامُوْٓا اِلَی الصَّلٰوةِ قَامُوْا کُسَالٰیﺫ یُرَا۬ءُوْنَ النَّاسَ وَلَا یَذْکُرُوْنَ اللہَ اِلَّا قَلِیْلًا) “নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে; বস্তুত তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলে শাস্তি দেন, আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সঙ্গে দাঁড়ায় কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে।” (সূরা নিসা ৪: ১৪২) রাসূলুল্লাহ বলেছেন : مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ ، وَمَنْ يُرَائِي يُرَائِي اللَّهُ بِه۪ যে ব্যক্তি লোকদের শুনানোর জন্য কাজ করে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে দিয়েই তা শুনিয়ে দেন। আর যে ব্যক্তি লোকদের দেখানোর জন্য কাজ করে, আল্লাহ তা‘আলা তার মাধ্যমে তা দেখিয়ে দেন। (সহীহ বুখারী হা. ৬৪৯৯, সহীহ মুসলিম হা. ২৯৮৬) মূলত ইবাদত করা উচিত একাগ্রচিত্তে আল্লাহ তা‘আলার জন্যই। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّه۫ يَرَاكَ তুমি এমনভাবে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে যেন তুমি আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পাচ্ছ, আর তা না পারলে এমন বিশ্বাস নিয়ে ইবাদত করবে যে, তিনি তোমাকে দেখছেন। (সহীহ বুখারী হা. ৫০, সহীহ মুসলিম হা. ১০২) সুতরাং আমল করতে হবে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাকে পাওয়ার জন্য, কোন ব্যক্তির সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য আমল করলে তা কখনও গ্রহণযোগ্য হবে না, বরং এমন আমলের জন্য গুনাহগার হতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (وَقَدِمْنَآ إِلٰي مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَا۬ءً مَّنْثُوْرًا) “আমি তাদের কৃতকর্মের দিকে অগ্রসর হব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।” (সূরা ফুরকান ২৫: ২৩) (يَمْنَعُوْنَ الْمَاعُوْنَ) শব্দের অর্থ সামান্য, ছোটখাট জিনিস। অর্থাৎ ওপরে বর্ণিত শ্রেণির লোকেরা এমন সব জিনিস দিতেও কার্পণ্য করে যা দিলে তার কোন ক্ষতি হবে না। যেমন পাত্র, বালতি, পেয়ালা ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। যে ব্যক্তি সামান্য জিনিস দিতে কার্পণ্য করে সে বেশি জিনিস তো কখনই দেবে না। (তাফসীর সা‘দী) অতএব প্রত্যেক মুসলিমের ভেবে দেখা উচিত, তার মাঝে এসব দোষগুলো আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে তাওবা করে ফিরে আসা উচিত। আর তাওবা না করলে আখিরাতে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. ইয়াতীম ও মিসকীনদের খাদ্য খাওয়ানোর প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। ২. যারা সালাতের ব্যাপারে অমনোযোগী তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। ৩. লোক দেখানো আমল আল্লাহ তা‘আলার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ৪. সৎ কাজের প্রতি উৎসাহী হওয়া দরকার। ৫. সালাতের ব্যাপারে উদাসীন ব্যক্তিদের জন্য দুর্ভোগ।
Water Hack Burns 2 lb of Fat OVERNIGHT
ReplyDeleteOver 160 000 men and women are using a simple and secret "liquids hack" to drop 2lbs each night while they sleep.
It is easy and it works every time.
Here's how to do it yourself:
1) Take a glass and fill it up with water half glass
2) And now do this crazy hack
and be 2lbs skinnier when you wake up!