মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নূরের তৈরি ও ফেরেশতা নন এবং গায়েবও জানতেন না, শুধু আল্লাহ তা‘আলা ওহীর মাধ্যমে যতটুকু তথ্য দিতেন ততটুকুই জানতেন।


قُل لَّآ أَقُولُ لَكُمْ عِندِى خَزَآئِنُ اللَّهِ وَلَآ أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلَآ أَقُولُ لَكُمْ إِنِّى مَلَكٌ ۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحٰىٓ إِلَىَّ ۚ قُلْ هَلْ يَسْتَوِى الْأَعْمٰى وَالْبَصِيرُ ۚ أَفَلَا تَتَفَكَّرُونَ

বল, আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন-ভান্ডার আছে, আর আমি অদৃশ্যের খবরও জানি না। আর আমি তোমাদেরকে এ কথাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা, আমার প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয় তাছাড়া (অন্য কিছুর) আমি অনুসরণ করি না। বল, অন্ধ আর চোখওয়ালা কি সমান, তোমরা কি চিন্তা করে দেখ না?
(সূরা আল আনআমঃ-৫০)

  •  আয়াতের তাফসীর: 
আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলে দিচ্ছেন, তুমি বলে দাও যে, আমি দাবী করি না যে, আমার কাছে আকাশমণ্ডলী ও জমিনের ধন-ভাণ্ডার রয়েছে। ফলে আমি যেভাবে ইচ্ছা তা ব্যয় করব। আমি এও দাবী করিনা যে, আমি অদৃশ্যের খবর জানি এবং আমি একজন ফেরেশতা। বরং আল্লাহ তা‘আলার কাছেই রয়েছে গায়েবের সকল জ্ঞান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (وَعِنْدَه۫ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَآ إِلَّا هُوَ) “ গায়েবের সকল চাবিকাঠি তাঁরই নিকট রয়েছে, তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তা জানে না।” (সূরা আনআম ৬:৫৯) আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মত একজন মানুষ, তিনি নূরের তৈরি ফেরেশতা নন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: (قُلْ إِنَّمَآ أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوْحٰٓي إِلَيَّ أَنَّمَآ إلٰهُكُمْ إِلٰهٌ وَّاحِدٌ) “বল:‎ ‘আমি তো তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের মা‘বূদ এক ও অদ্বিতীয়।”
(সূরা কাহ্ফ ১৮:১১০) মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন রাসূল তার কাছে যা ওয়াহী করা হয় তিনি তারই অনুসরণ করেন। (الْاَعْمٰی وَالْبَصِیْرُ) ‘অন্ধ ও চক্ষুষ্মান’অর্থাৎ কাফির আর মু’মিন কি সমান।
(আইসারুত তাফাসীর ১/৬১০) ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন: যে ব্যক্তি সত্যের অনুসারী ও তার দিকে হিদায়াত প্রাপ্ত এবং যে ব্যক্তি সত্য থেকে পথভ্রষ্ট তারা কি সমান? কখনো সমান নয়।
(ইবনে কাসীর, ৩য় খণ্ড, পৃঃ ২৯৩) তারপর আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সতর্ক করতে বললেন তাদেরকে যারা তাদের রবের সামনে উপস্থিত হওয়াকে ভয় করে এবং তাদেরকে জানিয়ে দিতে যে, তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই।

আয়াত থেকে শিক্ষণীয় বিষয়: ১. মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নূরের তৈরি ও ফেরেশতা নন এবং গায়েবও জানতেন না, শুধু আল্লাহ তা‘আলা ওয়াহীর মাধ্যমে যতটুকু তথ্য দিতেন ততটুকুই জানতেন।

আমাদের আরো পোষ্ট পড়ুনঃ 

Comments

Popular posts from this blog

সূরা আল কাউসার এর ফজিলত , শানে নুযুল , নামকরণ ও তাফসীর এবং শিক্ষা জেনে নিন

সূরা ইখলাসের নামকরণ, শানে নুযুল ও তাফসীর জেনে নিন | একজন সত্যিকার মা‘বূদের চারটি বৈশিষ্ট্য

সূরা আল মাউন এর নামকরণ ও তাফসীর এবং শিক্ষণীয় বিষয় জেনে নিন