Posts

সূরা আল মাউন এর নামকরণ ও তাফসীর এবং শিক্ষণীয় বিষয় জেনে নিন

Image
নামকরণ : অত্র সূরার সর্বশেষ আয়াতে উল্লিখিত الْمَاعُوْنَ মাউন শব্দ থেকেই সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এ সূরাকে সূরা আদ-দীন ও সূরা ইয়াতীম নামেও আখ্যায়িত করা হয়। (ফাতহুল কাদীর) সূরায় কাফিরদের দুটি বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত মুসল্লিদের তিনটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। أَرَأَيْتَ ক্রিয়া দ্বারা নাবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করা হয়েছে। মূলত প্রশ্নবোধক বাক্য দ্বারা বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। أَرَأَيْتَ অর্থ ألم تعلم তুমি কি জানো? মূলত এর দ্বারা শ্রোতাকে বক্তব্যের প্রতি উৎসাহ প্রদান ও আকৃষ্ট করা হচ্ছে। يُكَذِّبُ অর্থ মিথ্যা প্রতিপন্ন করা। الدِّيْنِ দ্বারা আখিরাতকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ যারা পুনরুত্থান, হিসাব, প্রতিদান ইত্যাদিসহ আখিরাতের ব্যাপারে নাবী রাসূলগণ যে সংবাদ দিয়েছেন তা অস্বীকার করে। (يَدُعُّ الْيَتِيْمَ) يَدُعُّ ক্রিয়ার অর্থ হলো: دع বা রূঢ় আচরণ করে হাঁকিয়ে দেয়া। দুনিয়াতে অবিশ্বাসীরা ইয়াতীমদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করত : রূঢ় আচরণের সাথে হাঁকিয়ে দিত এবং তাদের প্রতি জুলুম করত, খাদ্য দেওয়া তো দূরের কথা তাদের সাথে ভাল ব্যবহারও করত না। আরেকটি অর্থ হল গলাধাক্কা দেয়া। যেমন আল্

সূরা আল কাউসার এর ফজিলত , শানে নুযুল , নামকরণ ও তাফসীর এবং শিক্ষা জেনে নিন

Image
নামকরণ: সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত الكوثر কাউসার শব্দ থেকেই কাউসার নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া এ সূরাকে সূরা নাহারও বলা হয়। কাউসার দ্বারা উদ্দেশ্য হল হাউজে কাউসার, যা কিয়ামতের মাঠে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে প্রদান করা হবে। শানে নুযূল: আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কিছুক্ষণ তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন। হঠাৎ মাথা তুলে হাসিমুখে বললেন অথবা তাঁর হাসির কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন: এইমাত্র আমার ওপর একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। তারপর তিনি বিসমিল্লাহ বলে সূরা কাউসার পাঠ করলেন। অতঃপর তিনি বললেন: কাউসার কী তোমরা জান? জবাবে সাহাবাগণ বললেন: আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন: কাউসার হলো : জান্নাতে একটি নহর আল্লাহ তা‘আলা আমাকে দান করেছেন, তাতে বহু কল্যাণ নিহিত রয়েছে। (আহমাদ ৩/১০২, সনদ সহীহ) আল্লাহ তা‘আলা নাবী (সাঃ)-কে কাউসার দান করেছেন। এ কাউসার দ্বারা উদ্দেশ্য কী তা নিয়ে আলেম সমাজে মতামত রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম দু’টি হলো: ১. কাউসার দ্বারা জান্নাতের নহর উদ্দেশ্য। আয়িশাহ (রাঃ) কে (إِنَّآ أَعْطَيْنٰكَ الْكَوْثَرَ) আয়াতটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হ

সূরা আল কাফেরুন গুরুপ্ত নামকরণ ও তাফসীর জেনে নিন

Image
নামকরণ ও গুরুত্ব: الكافرون শব্দটি كافر এর বহুবচন। অর্থ : কাফিররা, কাফির-দল। প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাওয়াফ শেষে দু’রাকাত সালাতে সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাস পড়তেন। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ হা. ১৪৮) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ফজরের দুরাকাত সুন্নাতে এ সূরাদ্বয় পড়তেন। (সহীহ মুসলিম, আবূ দাঊদ হা. ১২৫৬) মাগরীবের পর দুরাকাত সুন্নাত সালাতে এ দুটি সূরা পড়ার কথাও বর্ণিত হয়েছে। (আহমাদ হা. ৪৭৬৩, সনদ সহীহ)। এছাড়া তিন রাকাতবিশিষ্ট বিতর সালাতের শেষের দু রাকাতে এ সূরাদ্বয় পাঠ করতেন। ফারওয়া বিন নাওফেল আল-আশআরী (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন : হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাঃ)! যখন আমি বিছানায় ঘুমাতে যাব তখন কী বলব তা আমাকে শিক্ষা দিন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন : তুমি সূরা কাফিরূন পড় এবং এর সমাপ্তির উপরেই ঘুমাও, কেননা তা শিরক থেকে সম্পর্ক ছিন্নকারী। (সহীহ, তিরমিযী হা. ৩৪০৩, আবূ দাঊদ হা. ৫০৫৫) ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন : এ সূরাটি হল মুশরিকরা যে-সব কাজ করে তা থেকে বিচ্ছিন্নতা ঘোষণাকারী এবং আল্লাহ তা‘আলার

সূরা নসরের নামকরণ, তাফসীর ও শিক্ষা আলোচনা তুলে ধরা হল।

Image
নামকরণ ও গুরুত্ব: النصر শব্দের অর্থ সাহায্য, সহযোগিতা। এ শব্দটি প্রথম আয়াতেই এসেছে, সেখান থেকেই উক্ত নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। এ সূরার অপর নাম সূরাতুত তাওদী বা বিদায়ের সূরা। এ সূরাতে নাবী (সাঃ)-এর ওফাত নিকটবর্তী হওয়ার ইঙ্গিত করা হয়েছে বিধায় এর নাম সূরাতুত্ তাওদী করা হয়েছে। (তাফসীর মারেফুল কুরআন)। এ সূরাটি অবতীর্ণের দিক দিয়ে সর্বশেষ অবতীর্ণ সূরা। (ফাতহুল বারী ৮/৬০৫, সহীহ মুসলিম হা. ৩০২৪) ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : আইয়ামে তাশরীক (১১, ১২, ১৩ই যিলহাজ্জের) মাঝামাঝি দিনে মিনায় এ সূরাটি অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বিদায় হাজ্জে ছিলেন। সূরাটি শেষ পর্যন্ত পড়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বুঝতে পারলেন যে, এটাই তাঁর শেষ হাজ্জ, অতঃপর তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রসিদ্ধ ভাষণটি প্রদান করেন। (ইমাম বায়হাকী তার দালায়েল গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন হা. ৯৪৬৪) আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : (إِذَا جَا۬ءَ نَصْرُ اللّٰهِ وَالْفَتْحُ) সূরাটি অবতীর্ণ হওয়ার পর নাবী (সাঃ) যে সালাতই আদায় করতেন তাতে سبحانك ربنا وبحمدك اللهم اغفرلي -পাঠ করতেন। (সহীহ বুখারী, হা. ৪৯৬৭, সহীহ মুসলিম হা. ৪৮৪) অন্য

সূরা ফালাক ও সূরা নাস উভয় সূরার ফজিলত, শানে নুযুল, নামকরণ, তাফসীর এবং সূরা ২টির শিক্ষণীয় বিষয় জেনে নিন

Image
সূরার নামকরণ: সূরা ফালাক ও সূরা নাস উভয় সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরার প্রথম আয়াতে উল্লিখিত শব্দ থেকে। ফালাক (الفلق) শব্দের অর্থ : প্রভাতকাল। আর নাস (النَّاس) অর্থ : মানুষ। এ দুই সূরাকে একত্রে معوذتان বা আশ্রয় প্রার্থনা করার দুই সূরা বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জাদুগ্রস্থ হওয়ার পর এ সূরাদ্বয় দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা হলে আল্লাহ তা‘আলার রহমতে তিনি সুস্থ হন, তাই এ নামেও এ সূরাদ্বয় পরিচিত। সূরার শানে নুযূল: মা আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, মদীনার ইয়াহূদী গোত্র বনু যুরাইকের মিত্র লাবীদ বিন আসাম নামক জনৈক মুনাফিক তার মেয়েকে দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মাথার ছিন্নচুল ও চিরুনীর ছিন্ন দাঁত চুরি করে এনে তাতে জাদু করে এবং মন্ত্র পাঠ করে চুলে ১১টি গিরা দেয়। এর প্রভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কোন কাজ করলে ভুলে যেতেন ও ভাবতেন যে করেননি। অন্য বর্ণনা মতে ৪০ দিন বা ৬ মাস এভাবে থাকেন। এক রাতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বপ্নে দেখেন যে, দু’জন লোক এসে একজন তাঁর মাথার কাছে অন্যজন পায়ের কাছে বসে। অতঃপর তারা বলে যে, বনু যুরাইকের খেজুর বাগানে যারওয়ান কূয়ার তলদেশে পাথরের নীচে চাপা দেয়া খেজুরের কাঁদির শুকনো খোসার মধ্যে ঐ জাদু করা চুল

সূরা ইখলাসের নামকরণ, শানে নুযুল ও তাফসীর জেনে নিন | একজন সত্যিকার মা‘বূদের চারটি বৈশিষ্ট্য

Image
সূরার নামকরণ: পবিত্র কুরআনুল কারীমের মাত্র দুটি সূরা যে সূরা দুটির নামকরণ সূরায় উল্লিখিত শব্দ বা সূরায় বর্ণিত ঘটনা থেকে করা হয়নি। বরং নামকরণ করা হয়েছে সূরার মুখ্য উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। একটি হলো সূরা ফাতিহা আর দ্বিতীয়টি হলো সূরা ইখলাস। অত্র সূরায় একজন সত্যিকার মা‘বূদের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। الإخلَاص শব্দের অর্থ : একনিষ্ঠভাবে কোন কিছু করা। যেমন বলা হয় : أخلص لله عمله সে একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহ তা‘আলার জন্যই তার আমলকে সম্পাদন করেছে। সূরাতে যেহেতু আল্লাহ তা‘আলার পরিচয় ও তাওহীদ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে তাই إخلَاص নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। সূরাটির ফযীলত: সূরাটি আকারে ছোট হলেও ফযীলতের দিক দিয়ে অনেক বড়। আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর সাহাবীদের বললেন : তোমাদের কেউ কি রাতে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পাঠ করতে অপারগ হবে? এটা তাদের জন্য কষ্ট কর হয়ে গেল। তারা বলল : হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাঃ)! আমাদের কে এরূপ করতে সক্ষম হবে? তখন রাসূল (সাঃ) বললেন : (قُلْ هُوَ اللّٰهُ أَحَدٌ) সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য। (সহীহ বুখারী হা. ৫০১৫) অর্থাৎ এক তৃতীয়াংশ কুর

জুমু‘আর দিনে প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষের ওপর গোসল করার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ

Image
জুমু‘আর দিনে  প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষের ওপর গোসল করার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ আমরা অনেকেই জুমার দিনে গোসল করতে চাই না । আমরা অনেকে না জেনে এই ভূলটি করে থাকি । শুক্রবার দিনে নবীজী (সাঃ) গোসলের প্রতি তাগিদ দিয়েছেন । তবে যদি কেউ কারণ বশত গোসল না করে, তাহলে কোন সমস্যা নেই । নিচে হাদিসে তা আমরা দেখতে পাব। তবে গোসল করা উত্তম। তো চলুন এ সম্পর্কে  হাদিস গুলো জেনে নিই। আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ জুমু‘আর সলাতে আসতে মনস্থ করলে সে যেন গোসল করে।  (সহীহ মুসলিম-১৮৩৬; ই.ফা. ১৮২১, ই.সে. ১৮২৮) আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা জুমু‘আর দিন ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) লোকদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তখন ‘উসমান ইবনু ‘আফ্‌ফান (রাঃ) প্রবেশ করেন। ‘উমার (রাঃ) তার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, লোকদের কি হল যে, তারা আযানের পরও (মাসজিদে আসতে) বিলম্ব করে। ‘উসমান (রাঃ) বলেন, হে আমীরুল মু'মিনীন ! আমি আযান শোনার পর ওযূ করা ছাড়া অতিরিক্ত আর কিছু করিনি, অতঃপর এসে পৌছেছি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, ওযূও চলে তবে আপ